Physical Address
304 North Cardinal St.
Dorchester Center, MA 02124
Physical Address
304 North Cardinal St.
Dorchester Center, MA 02124

অপেক্ষা করছিলাম তাই সেই সময় শুধু শুধু বসে না থেকে নাইজেরিয়ার এক মহিলার সাথে আলাপ শুরু করে দিলাম। মহিলাও দেখি স্বত্বঃস্ফূর্তভাবেই আলাপে অংশ নিলো। তো মহিলা অনেক বড়সড় এক কালো মহিলা তাকে দেখেই ভালুকের কথা মনে পড়ে যায়। ওকে প্রথমবার যখন দেখেছিলাম তখন ওর বাচ্চা সাথে ছিলো, তখন ওকে দেখে আমার কাছে লিটারেলি মা ভালুকের মতোই মনে হয়েছিলো, সেটা ওকে জানালাম। মহিলা সিঙ্গেল, ডিভোর্স হয়ে গেছে খুব সম্ভবত কিংবা আলাদা থাকে এক্স এর থেকে। টুকটাক অনেককিছু নিয়েই আলাপ হলো। জিজ্ঞেস করলাম ওর মাতৃভাষা কি? ও জানালো ইগবো(Igbo) হচ্ছে ওর মাতৃভাষা। তখন জিজ্ঞেস করলাম ও আর কোন কোন ভাষা জানে। ও জানালো ইংরেজী জানে, জার্মান মোটামুটি জানে ও (Yoruba) ইয়োরুবা ভাষাতেও সে কথা চালাতে পারে যেটা কিনা নাইজেরিয়ার ২৫০ টা ভাষার মধ্যে আরেকটি ভাষা। আরও মজার ব্যাপার হলো জানতে পারলাম নাইজেরিইয়ায় যে এতো ভাষাভাষী তাদের নিজেদের সাথে নিজেদের যোগাযোগের জন্য কোন common ভাষা নেই, তাদের রাষ্ট্রীয় ভাষা হচ্ছে ইংরেজী, ইংরেজীই একমাত্র ভাষা যেটা তারা সবার সাথে যোগাযোগ করার জন্য ব্যবহার করে। তখন ওকে জিজ্ঞেস তুমি কোন ভাষায় সবচেয়ে বেশী ভালো পারো? জানতে চাচ্ছি কোন ভাষাতে তুমি নিজেকে সবচেয়ে ভালোভাবে express করতে পারো। প্রথমে ও জানালো যে ইংরেজীতে ও সবচেয়ে বেশী এক্সপ্রেস করতে পারে, ও তার পরিবারে মা-বোনের সাথে ইংরেজী ভাষাতেই কথা চালায়, তবে কিছু কিছু আবেগীয় অনুভূতি প্রকাশে ইগবো ভাষাই সবচেয়ে বেশী কার্যকরী, কারন ইংরেজীতে সেসব অনুভূতি express করা সম্ভব না। ওকে জিজ্ঞেস করলাম ছেলের সাথে কোন ভাষায় কথা বলে? ও জানালো ইংরেজীতেই, একটু-আধটু ইগবো ভাষাতেও কথা বলে। তবে ছেলের সাথে ছেলের বাবা কেবল ইগবো ভাষাতেই কথা বলে, আর ছেলেও খুব দ্রুত শিখে ফেলতে (pick করতে) পারে, বেশ ইনটেলজেন্ট হয়েছে ছেলেটা তৃপ্তি নিয়ে সে জানালো, আর সাথে সাথে ছেলের একটা ভিডিও দেখালো। তারপর আরেকটা প্রশ্ন করলাম ওকে তাহলো, ওর প্রাক্তন স্বামী আরেকটা বিয়ে করেছে কিনা, অথবা কোন এফেয়ার হয়েছে কিনা? জানালো যে প্রাক্তন বিয়ে করেনি এখনও তবে এফেয়ার হয়েছে তারই মতো আরেকজন কালো মহিলার সাথে, তবে সে ঠিক জানেনা যে ওই মহিলাও নাইজেরিয়ান কিনা।
মহিলার সাথে কথোপকথনে বুঝে গেলাম শেকড়ের গুরুত্ব কত বেশী। একজন মানুষ যখন শেকড় ছাড়া হয় তখনই তার অস্তিত্বে সংকট দেখা দেয়া শুরু করে, এজন্য নগরায়নের ফলে গোত্র-পরিবার ছেড়ে, গ্রাম, প্রকৃতি ছেড়ে মানুষ যখন শহরমুখী হয়েছে তখনই মানুষ তার আত্নিক সংযোগ হারিয়ে ফেলতে শুরু করেছে। আত্নিক সংযোগ হারিয়ে মানুষজন অস্তিত্বের সংকটে ভুগতে শুরু করেছে। এরপর মানুষ অর্থ-বিত্ত, টাকা-পয়সা, ধন-সম্পদের পাহাড় গড়ার অসুস্থ প্রতিযোগীতায় নেমেছে কিন্তু কোনভাবেই তাদের মনের সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি, কোনভাবেই তাদের মনের শূণ্যতা দূর করতে পারেনি।সেই শূণ্যতা কাটাতে শহর ছেড়ে বড় শহরে, দেশ থেকে অন্য দেশে পাড়ি জমিয়েছে। কিন্তু সেই কাংখিত পূর্ণতা, কাংখিত শান্তি ও সুখের দেখা মেলেনি তাদের, সেগুলো যেনো চির অধরাই রয়ে গিয়েছে।