Physical Address

304 North Cardinal St.
Dorchester Center, MA 02124

emotional trigger

ইমোশনাল ট্রিগারঃ কারন ও প্রতিকার

ইমোশনালি ট্রিগার হওয়া বা কাউকে ইমোশনালি ট্রিগার করা নিয়ে অনেক আলোচনা সমালোচনা আছে। মানুষ যেগুলো তাদের ট্রিগার করে এমন সিচুয়েশন কিংবা মানুষজন যেকোন মূল্যে এড়িয়ে চলতে চায়। আবার অনেক সময় যারা অন্যদেরকে ট্রিগার করে তাদেরকে মন্দের তালিকায় ফেলে দেয়া হয় দলগতভাবে। মানুষ কেনো এতো ট্রিগার হয়? কিংবা অন্যদেরকে ট্রিগার করে মানুষ কি এতো আনন্দ পায়?  মনোবিজ্ঞানের ভাষায় ইমোশনালি ট্রিগার হওয়া একটি অতি স্বাভাবিক ঘটনা, বিশেষ করে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে যখন আমরা ট্রিগার হই তখন আমাদের শরীর আমাদেরকে সংকেত দেয়, আর সূক্ষ এই সংকেতগুলোকে সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করার দক্ষতা অর্জন করলে আমাদের জন্য কোনটি ভালো আর কোনটি মন্দ তা নির্ণয় করা সহজ হয়ে যায়। সমস্যা দেখা যায় তখন যখন আমরা কেবল ব্যক্তিগত ভালো লাগাকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে মন্দ যেকোনো কিছু এড়িয়ে চলি। কেউ যদি এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয় যেখানে মানুষজন তার উপর সব সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে চায়, সেক্ষেত্রে যার উপর চাপিয়ে দেয়া হয় তার এই বিষয়ে ভালো লাগার কোন কারণ নেই,তার সমস্ত অস্তিত্ব এই চাপিয়ে দেয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে চাইবে। কেউ যদি অন্যদের চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্ত মেনে নিতে বাধ্য হয় তাহলে সে এক সময় আবিষ্কার করবে যেখানেই সে যাক না কেনো, যাদের সাথেই সে মিশুক না কেনো সব পরিস্থিতিতে তাকে এটা সেটা চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। তারপর এক সময় ব্যক্তির জীবনে এমন পরিস্থিতিও তৈরি হয় যেখানে কেউ তার উপর কোন কিছু চাপিয়ে না দিলেও সে নিজেই নিজের উপর অনেক কিছু চাপিয়ে দেয়, আস্তে আস্তে তার স্বভাবও হয়ে ওঠে অন্যদের ওপর তার সিদ্ধান্ত বিচার বোধ, চিন্তা-ভাবনা চাপিয়ে দেয়া, এমন ব্যক্তি খুঁজে খুঁজে এমন মানুষদের বের করে যাদের উপর চাপিয়ে দেয়া যায়। এই যে চাপিয়ে দেয়ার চক্র এটা চলতেই থাকে, এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তিতে। যখন কেউ চাপিয়ে দেয়ার ব্যাপারে সচেতন থাকে তখন সে তার ট্রিগার ধরতে পারে, এবং সে অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারে। এখন‌ ট্রিগার হলে আমাদের কি করা উচিত? ট্রিগার হলে প্রথমে আমাদের বোঝা দরকার, কেনো আমরা ট্রিগার হচ্ছি? এরপর বোঝা দরকার কোন কোন পরিস্থিতি ও ব্যক্তি এইসব ট্রিগারের কারন। বেশিরভাগ সময় আমরা ধরে নেই কোন বিশেষ প্রসঙ্গ, পরিস্থিতি বা ব্যক্তিদের এড়িয়ে চললেই হয়তো আমরা ট্রিগার হবো না, কিন্তু বিষয়টাকে এতো সরলীকরণ করা ঠিক হবেনা। হয়তো সাময়িকভাবে কিছু কিছু পরিস্থিতি বা মানুষজন এড়িয়ে চলা সম্ভব কিন্তু স্বাভাবিক জীবনযাপনে আমাদেরকে সবকিছুর মুখোমুখি হতে হয়। ধরলাম কেউ সব সময় আপনার উপর কিছু না কিছু চাপিয়ে দিতে চায়, এখন আপনাকে কিভাবে চিন্তা করতে হবে? চিন্তা করতে হবে এই পরিস্থিতি আমাকে কি শেখাতে চাইছে? কেনো মানুষজন আমাকে এটা সেটা চাপিয়ে দিচ্ছে? এখানে আমি কি করতে পারি? কেউ আপনার উপর কিছু চাপিয়ে দিলেই আপনাকে তাতে সায় দিতে হবে এমন না, আবার আপনি সব সময় কেউ কিছু চাপিয়ে দিতে চাইলে না করবেন বিষয়টা এমনও না। আপনার যদি সত্যি সত্যি কিছু করতে ভালো লাগে, চাপ না লাগে তাহলে আপনি তা অবশ্যই করবেন। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে আপনার কাছে যে বিষয়টি ভালো লাগছে না তা আপনি ভদ্রতার খাতিরে করতে যাবেন না, বাংলার সেই প্রবাদ “অনুরোধে ঢেকি গেলা” এইটা কল্পনা করে দেখতে পারেন ব্যাপারটা যথেষ্ঠ ফানি- এমন পরিস্থিতিতে রাগ কমানোর জন্য খুবই কার্যকরী! আবার এই চাপানোর ব্যাপারটায় খুব বেশি প্রতিক্রিয়া (react) দেখাবেন না। আপনার ভালো না লাগলে বা অপারগ হলে ভালোভাবে না করে দিবেন‌, মনে রাখতে হবে আপনাকে অবশ্যই ভদ্রভাবে না করতে হবে। সম্পর্কের খাতিরে আপনি ব্যাখ্যা করতে পারেন কেনো আপনি তাদের অনুরোধ রাখতে পারছেন না, তবে ব্যাখ্যা করতে হবে বিষয়টি এমনও না। ব্যাখ্যা কেউ চাইলে তখন হয়তোবা আপনি আপনার কারণটা জানিয়ে দিতে পারেন অল্প কথায় তবে হ্যাঁ কোন মিথ্যা কারন দেখাতে যাবেন না যেনো, কারন যদিও আপনি মনে করছেন আপনার মিথ্যাটা অন্যরা ধরতে পারবে না তবে কেউ যখন মিথ্যা বলে বেশিরভাগ সময় সেই মিথ্যা যুক্তিগুলো খুবই খোঁড়া (lame) হয়ে থাকে! যে সত্য বলে তার এনার্জি আর যে মিথ্যা বলে তার এনার্জি এক না, অনেক বিজ্ঞজন এই পার্থক্যটা ধরতে পারে, আর মিথ্যা বলছেন এটা বুঝতে পারলে আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবেন! ট্রিগার যারা করে তারা অনেকটা বাচ্চাদের মতো, বাচ্চাদের যদি কিছু করতে নিষেধ করা হয় তাহলে সেটা তারা বারবার করবে। আমরা বড় মানুষেরাও বাচ্চাদের থেকে আলাদা কিছু নই, আমরাও পছন্দ করি অন্যদের ট্রিগার করতে। অন্যদের ট্রিগার করতে পারলে আমরা একটা কন্ট্রোল ফিল করি, বড় বয়সে বেশীরভাগ সময় যেখানে আমরা বুঝে যাই আমাদের নিজেদের জীবনের উপর আমাদের আসলে তেমন কোন নিয়ন্ত্রন (control) নেই তখন আমরা অন্যদের ট্রিগার করতে চাই, বিভিন্নভাবে আমরা চেষ্টা করি, আর একবার কাউকে ট্রিগার করতে পারলে আমরা বারবার সেটা করে যাই! আসলে যারা ট্রিগার করতে পছন্দ করে, কিংবা সারাক্ষন অন্যদের পেছনে লেগে থাকে, অন্যদের নিয়ে আলোচনা সমালোচনা করে তারা নিজেরাই নিজেদের জীবনে অনেক অসুখী, সেসব ভুলে থাকতেই তারা অন্যদের পেছনে পড়ে থাকে। কেউ যখন ট্রিগার হবে তখন সে যদি নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে, ট্রিগার হওয়ার কারণ বের করে তার সমাধান করতে পারে তবে তার ভেতরে একধরনের প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে যা কিনা ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে খুবই প্রয়োজনীয় দক্ষতা। কাজেই ট্রিগার হচ্ছেন যেসব ব্যক্তি বা পরিস্থিতিতে সেসব এড়িয়ে না চলে বরং সেগুলোর মুখোমুখি হোন, দেখবেন আপনার মানসিক শক্তি অনেকগুন বেড়ে গেছে। যারা ধর্মে বিশ্বাস করে তারা ভালো করেই জানেন সৃষ্টিকর্তা আমাদের এমন কোন পরিস্থিতিতে ফেলেন না যা মোকাবেলা করার ক্ষমতা আমাদের নেই। বিরুদ্ধ যেকোনো শক্তির মুখোমুখি হলেই আমরা শক্তিশালী হয়ে গড়ে উঠি, আর যারা সব বিরুদ্ধ শক্তি এড়িয়ে চলি তারা মানসিকভাবে নাজুক থেকে যাই। দিনেদিনে সীমিত গন্ডীতে আবদ্ধ দূর্বল ব্যক্তিতে পরিণত হই।

tamziadmin
tamziadmin
Articles: 75